কোরআন-হাদীস প্রচার করাই কি আমার অপরাধ
বলে মন্তব্য করেছেন মানবতাবিরোধী অপরাধে আটক জামায়াতের নায়েবে আমীর `মাওলানা
দেলওয়ার হোসাইন সাঈদী।'
মঙ্গলবার ট্রাইবুনাল-১ এ দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালতের এজলাস কক্ষে তিনি এ কথা বলেন।
আদালতকে উদ্দেশ্য করে সাঈদী বলেন, অনেক আইনজীবী, স্বাক্ষী ও বিভিন্ন ব্যাক্তির বক্তব্য আপনারা শুনেছেন। কিন্তু অভিযুক্ত হিসেবে আমার কোন বক্তব্য শোনা হয়নি।
অতঃপর নিজেকে নির্দোষ দাবী করে তিনি আরো বলেন, বিগত অর্ধ শতাব্দী ধরে আমি কোরআনের দাওয়াত বাংলাদেশের ঘরে ঘরে পৌছে দিয়েছি, এটাই কি আমার অপরাধ?
আমি কোরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অংশগ্রহন করেছি, এটাই কি আমার অপরাধ?
মাননীয় আদালত এটা যদি আমার অপরাধ হয়ে থাকে তাহলে, এ অপরাধে অপরাধী হয়ে হাজার বার ফাঁসির মঞ্চে যেতে আমি রাজি আছি বলেও অভয়বানী দেন এ জামায়াত নেতা।
দীর্ঘ ৮ মিনিট বক্তব্যে বিভিন্ন বিষয়ে তিনি ট্রাইবুনালের সমোলচনা করেন।
ট্রাইবুনালে দেওয়া সাঈদীর বক্তব্য হুবহু
মাননীয় আদালত,
২০১১ সালের অক্টোবরের ৩ তারিখ এই আদালতের তদানিন্তন চেয়ারম্যান নিজামুল হক আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পড়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমি দোষী না নির্দোষ? আপনি তখন এই আদালতের ৩ সদস্য বিশিষ্ট বিচারকদের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি ন্যায় বিচারে ভ্রষ্ট পথ অনুসরন করেছিলেন বিধায় একরাশ গ্লানি নিয়ে স্বেচ্ছায় সরে পড়তে হয়েছে। আজ সেই চেয়ারে আপনি সম্মানিত চেয়ারম্যান। এটাই আল্লাহর বিচার।
সেদিন তখনকার চেয়ারম্যান নিজামুল হকের প্রশ্নের জবাবে আমি যা বলেছিলাম, সেখান থেকেই আমার সামান্য কিছু বক্তব্য শুরু করছি। ন্যায় বিচারের স্বার্থে আপনাদের যা শোনা জরুরী বলে আমি মনে করি। নিশ্চয়ই আপনার মনে আছে আমি বলেছিলাম- আমার বিরুদ্ধে আনীত ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং শতাব্দীর জঘন্য ও নিকৃষ্টতম মিথ্যাচার।
মাননীয় আদালত,
২০১১ সালের অক্টোবরের ৩ তারিখ এই আদালতের তদানিন্তন চেয়ারম্যান নিজামুল হক আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পড়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমি দোষী না নির্দোষ? আপনি তখন এই আদালতের ৩ সদস্য বিশিষ্ট বিচারকদের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি ন্যায় বিচারে ভ্রষ্ট পথ অনুসরন করেছিলেন বিধায় একরাশ গ্লানি নিয়ে স্বেচ্ছায় সরে পড়তে হয়েছে। আজ সেই চেয়ারে আপনি সম্মানিত চেয়ারম্যান। এটাই আল্লাহর বিচার।
সেদিন তখনকার চেয়ারম্যান নিজামুল হকের প্রশ্নের জবাবে আমি যা বলেছিলাম, সেখান থেকেই আমার সামান্য কিছু বক্তব্য শুরু করছি। ন্যায় বিচারের স্বার্থে আপনাদের যা শোনা জরুরী বলে আমি মনে করি। নিশ্চয়ই আপনার মনে আছে আমি বলেছিলাম- আমার বিরুদ্ধে আনীত ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং শতাব্দীর জঘন্য ও নিকৃষ্টতম মিথ্যাচার।
আল্লাহর কসম! আমার বিরুদ্ধে রচনা করা চার সহস্রাধিক পৃষ্ঠার প্রতিটি পাতার
প্রতিটি লাইন, প্রতিটি শব্দ, প্রত্যেকটি বর্ণ মিথ্যা, মিথ্যা এবং মিথ্যা।
১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে কোন এক দেলোয়ার শিকদার, দেল্লার
করা অপরাধ সমূহ আমার উপর চাপিয়ে দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউশন আমার
বিরুদ্ধে মিথ্যার পাহাড় রচনা করেছেন।
আজ আমি আল্লাহর নামে শপথ নিয়ে আপনাদের সামনে বলতে চাই, সরকার ও তার রাষ্ট্র যন্ত্র কর্তৃক চিত্রিত ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত অপরাধের হত্যাকারী, লুন্ঠন, গণ হত্যাকারী, ধর্ষক, অগ্নি সংযোগকারী, দেলোয়ার শিকদার বা ‘দেলু’ বা দেইল্যা রাজাকার আমি নই। আমি ৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রিয় জন্মভূমি এই বাংলাদেশের আপামর জনসাধারনের নিকট চিরচেনা পবিত্র কোরআনের একজন তাফসীরকারক, কোরআনের পথে মানুষকে আহ্বানকারী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।
যে আমি সেই যৌবন কাল থেকেই শান্তি ও মানবতার উৎকর্ষ সাধনে পবিত্র কুরআনের শ্বাশ্বত বানী প্রচার করার লক্ষ্যে নিজ জন্ম ভূমি থেকে শুরু করে বিশ্বের অর্ধশত দেশ গ্রেফতারের পূর্ব পর্যন্ত ভ্রমন করেছি।
আজ আমি আল্লাহর নামে শপথ নিয়ে আপনাদের সামনে বলতে চাই, সরকার ও তার রাষ্ট্র যন্ত্র কর্তৃক চিত্রিত ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত অপরাধের হত্যাকারী, লুন্ঠন, গণ হত্যাকারী, ধর্ষক, অগ্নি সংযোগকারী, দেলোয়ার শিকদার বা ‘দেলু’ বা দেইল্যা রাজাকার আমি নই। আমি ৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রিয় জন্মভূমি এই বাংলাদেশের আপামর জনসাধারনের নিকট চিরচেনা পবিত্র কোরআনের একজন তাফসীরকারক, কোরআনের পথে মানুষকে আহ্বানকারী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।
যে আমি সেই যৌবন কাল থেকেই শান্তি ও মানবতার উৎকর্ষ সাধনে পবিত্র কুরআনের শ্বাশ্বত বানী প্রচার করার লক্ষ্যে নিজ জন্ম ভূমি থেকে শুরু করে বিশ্বের অর্ধশত দেশ গ্রেফতারের পূর্ব পর্যন্ত ভ্রমন করেছি।
সেই আমি আজ ৭৩ বছর বয়সে জীবন সায়াহ্নে এসে সরকার ও সরকারী দলের দায়ের করা
‘ধর্মীয় মূল্যবোধের উপর আঘাত হানার’ হাস্যকর ও মিথ্যা মামলায় গত ২৯ জুন
২০১০ থেকে আজ পর্যন্ত কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে মানবেতর অবস্থায়
দিনাতিপাত করছি। অদৃষ্টের কি নির্মম পরিহাস!
আমার বিরুদ্ধে ধর্মীয় মূল্যবোধের উপর আঘাত হানার অভিযোগ উত্থাপন এবং
তজ্জন্য আমাকে তড়িৎ গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করার কাজটি করলো এমন এক
সরকার, যারা আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস কথাটি দেশের সংবিধানে বহাল
রাখাকে সহ্য করতে না পেরে অবলীলায় তা মুছে দিতে কুন্ঠাবোধ করেনি।
যাহোক, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এই ৪২ বছরের মধ্যে আমার বিরুদ্ধে কোন
বিষয়েই কোন মামলা ছিলো না। সামান্য একটি জিডিও ছিলো না। গণতন্ত্রের
লেবাসধারী বর্তমান এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের বদান্যতায়, মহানুভবতায়
মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে আজ আমি ১৭টি মামলার আসামী।
সেই জুন ২০১০ থেকে অদ্যাবধি কথিত মানবতাবিরোধী ২০ টি অপরাধের অভিযোগসহ
১৭টি মামলা আমার বিরুদ্ধে দায়ের করে এবং বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে
সরকার আমাকে তাদের এক রাজনৈতিক তামাশার পাত্রে পরিনত করেছে। যা আজ দেশবাসীর
কাছে মেঘমুক্ত আকাশে দ্বি-প্রহরের সূর্যের মতোই স্পষ্ট।
মাননীয় আদালত,
যে ২০টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আজ আপনাদের সম্মুখে আমি দন্ডায়মান, সেগুলো সরকারের হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যেই সাজানো। ১৯৭১ সনে পিরোজপুর বা পাড়েরহাটে পাক বাহিনী যা ঘটিয়েছে, সেসব কাহিনী সৃজন করে চরম মিথ্যাবাদী ও প্রতারক এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও তার সহযোগীরা নীতি নৈতিকতার মূলে পদাঘাত করে আমার নামটি জুড়ে দিয়েছেন।
মাননীয় আদালত,
যে ২০টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আজ আপনাদের সম্মুখে আমি দন্ডায়মান, সেগুলো সরকারের হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যেই সাজানো। ১৯৭১ সনে পিরোজপুর বা পাড়েরহাটে পাক বাহিনী যা ঘটিয়েছে, সেসব কাহিনী সৃজন করে চরম মিথ্যাবাদী ও প্রতারক এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও তার সহযোগীরা নীতি নৈতিকতার মূলে পদাঘাত করে আমার নামটি জুড়ে দিয়েছেন।
মহান আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসী, আল্লাহর নিকট জবাবদিহিতায় বিশ্বাসী,
মৃত্যুর পরের আযাবে বিশ্বাসী, পরকাল ও জাহান্নামের কঠিন শাস্তিতে বিশ্বাসী
কোন মুসলমানের পক্ষ্যে এতো জঘন্য মিথ্যাচার আদৌ সম্ভব নয়।
তদন্ত কর্মকর্তা এবং সহযোগিতরা তাদের সৃজিত অভিযোগগুলো প্রমানের জন্য কয়েকজন বিতর্কিত চরিত্র ভ্রষ্ট ও সরকারী সুবিধাভোগী দলীয় লোক ব্যতিত স্বাক্ষী প্রদানের জন্য কাউকেই হাজির করতে পারেননি।
এতদসত্ত্বেও প্রচন্ড ক্ষিপ্রতার সাথে এই ট্রাইব্যুনালের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিচার প্রক্রিয়ার সমাপ্তি টেনেছেন। তিনি আইন-কানুন, ন্যায় বিচারের শপথ, অভিযুক্ত হিসেবে আমার বক্তব্য প্রদানের প্রাপ্য অধিকার প্রদান কোন কিছুরই তোয়াক্কা করেননি। বরং তিনি রায় ঘোষনার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।
এরই মধ্যে ঘটে যায় মহান রাব্বুল আলামিনের হস্তক্ষেপের ঘটনা। আজ সেই একদা
সমাপ্তকৃত বিতর্কিত মামলার পূন:সমাপ্তির দ্বিতীয় আয়োজন। কিন্তু আমি পূর্বের
ন্যায় একই উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি মামলা যেনো-তেনো প্রকারে শেষ করার
সেই একই চেষ্টা।
মাননীয় আদালত,
এই ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৃত বিবেচনায় আমার বিরুদ্ধে পরিচালিত মামলার রায় প্রকাশ করে গেছেন। সাবেক চেয়ারম্যান মিডিয়ায় প্রকাশিত স্কাইপি সংলাপকে মেনে নিয়ে অন্যায় ও বে-আইনী ভাবে পরিচালিত বিচার কার্যের সকল দায়ভার বহন করে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে বিদায় হয়েছেন। ষড়যন্ত্র ও অন্যায়ভাবে বিচার কার্য পরিচালনার বিষয়টি তার স্কাইপি কথোপকথনে প্রকাশ পেয়েছে।
সাবেক চেয়ারম্যানের বক্তব্যে প্রচ্ছন্নভাবে উঠে এসেছে কিভাবে সরকারের চাপে
পড়ে, সুপ্রীম কোর্টের জনৈক বিচারপতির প্রলোভনে পড়ে, তথাকথিত ড. আহমেদ
জিয়াউদ্দিনের ডিকটেশন অনুযায়ী বিচারকার্য পরিচালনা করে। তৃতীয় ব্যক্তির
মাধ্যমে প্রসিকিউশনের সাথে অবৈধ যোগসাজসে বিচার কার্য পরিচালনায় ষড়যন্ত্রের
মাধ্যমে আমাকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। আদালতের ক্ষমতাকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে
আমার পক্ষের স্বাক্ষীর অগ্রিম তালিকা জমা দিতে বাধ্য করে।
সেই তালিকা প্রসিকিউশন এবং তাদের মাধ্যমে সরকার, সরকারী দল ও স্থানীয়
প্রশাসনকে সরবরাহ করার ব্যবস্থা গ্রহন করে স্বাক্ষীদের উপর চাপ সৃষ্টি ও ভয়
ভীতি দেখিয়ে স্বাক্ষ্য প্রদানের জন্য আদালতে হাজির না হওয়ার জন্য চাপ
সৃষ্টিসহ নানাবিধ অনিয়ম ও বে আইনী কর্মপন্থার মাধ্যমে সমগ্র বিচার কার্যটি
কলুষিত করেছে।
এছাড়া সাবেক চেয়ারম্যানের প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়ে সেইফ হাউজ স্ক্যান্ডাল, আদালত প্রাঙ্গন থেকে আমার স্বাক্ষীকে ডিবি পুলিশ কর্তৃক অপহরন ও গুম করার স্ক্যান্ডাল, ১৫ জন স্বাক্ষীর অনুপস্থিতিতে তদন্ত কর্মকর্তার জবানে তাদের বক্তব্য গ্রহন করার স্ক্যান্ডাল এর মতো বিষয়গুলোও আমার মামলায় প্রভাব বিস্তার করে আছে।
এতো সব ষড়যন্ত্র ও স্ক্যান্ডাল জর্জরিত বিচারকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের মাধ্যমে মূলত: সাবেক চেয়ারম্যান নিজেই পরিত্যাক্ত ও পরিত্যাজ্য ঘোষণা করে দিয়ে গেছেন। সুতরাং সেই পরিত্যাজ্য বিষয়ের উপর ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার কাজ নির্ভর করা যেতে পারে কিভাবে !
মাননীয় আদালত, দেশবাসীর কাছে, বিশেষ করে আপনাদের কাছে আমার বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্র এবং ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচিত হওয়ার পরেও এই মামলা চলে কিভাবে ?
গত ২৩/০১/১৩ তারিখে ট্রাইবুনাল-২ এর চেয়ারম্যান ওবায়দুল হাসান সাহেব বলেছেন, “এই ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। প্রধানমন্ত্রী চাইলে ট্রাইাব্যুনাল থাকবে, না চাইলে আমরা চলে যাবো।”
এছাড়া সাবেক চেয়ারম্যানের প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়ে সেইফ হাউজ স্ক্যান্ডাল, আদালত প্রাঙ্গন থেকে আমার স্বাক্ষীকে ডিবি পুলিশ কর্তৃক অপহরন ও গুম করার স্ক্যান্ডাল, ১৫ জন স্বাক্ষীর অনুপস্থিতিতে তদন্ত কর্মকর্তার জবানে তাদের বক্তব্য গ্রহন করার স্ক্যান্ডাল এর মতো বিষয়গুলোও আমার মামলায় প্রভাব বিস্তার করে আছে।
এতো সব ষড়যন্ত্র ও স্ক্যান্ডাল জর্জরিত বিচারকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের মাধ্যমে মূলত: সাবেক চেয়ারম্যান নিজেই পরিত্যাক্ত ও পরিত্যাজ্য ঘোষণা করে দিয়ে গেছেন। সুতরাং সেই পরিত্যাজ্য বিষয়ের উপর ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার কাজ নির্ভর করা যেতে পারে কিভাবে !
মাননীয় আদালত, দেশবাসীর কাছে, বিশেষ করে আপনাদের কাছে আমার বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্র এবং ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচিত হওয়ার পরেও এই মামলা চলে কিভাবে ?
গত ২৩/০১/১৩ তারিখে ট্রাইবুনাল-২ এর চেয়ারম্যান ওবায়দুল হাসান সাহেব বলেছেন, “এই ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। প্রধানমন্ত্রী চাইলে ট্রাইাব্যুনাল থাকবে, না চাইলে আমরা চলে যাবো।”
তাহলে মাননীয় আদালত, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে প্রতিষ্ঠিত ট্রাইব্যুনাল রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বাধীনভাবে বিচার পরিচালনা করবে কিভাবে ? স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলছেন বিচারকে দ্রুততর করা হবে। বিচার তাহলে কে করছে? এই ট্রাইব্যুনালের তাহলে প্রয়োজন কি? স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার অস্তিত্ব রইলো কোথায়?
মাননীয় আদালত,
আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সমূহের ব্যাপারে সাবেক চেয়ারম্যানের মতামত বা রায় তার কথোপকথনেই প্রকাশিত হয়েছে। স্কাইপি সংলাপে তিনি স্বীকার করেছেন যে আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সমূহের সাথে আইনের খুব একটা সম্পর্ক নেই।
আমার বিরুদ্ধে পরিচালিত এই মামলাটি দেশী দরবারের মতোই। তার ভাষায়; “সাঈদীর কেইসটা ডিফারেন্ট। এই সাঈদীর কেইসটার লগে আইনের সম্পর্ক খুব বেশি না। এডা আমাদের দেশী দরবারের মতই।” ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যানের প্রকাশিত এই মতামত বা মন্তব্যের পর এই মামলা চলার নৈতিক অবস্থান কোথায় থাকে?
বিদায়ী চেয়ারম্যান আমার মামলাটি আদ্যপ্রান্ত পরিচালিত করে একে যে দেশী দরবারের সাথে তুলনা করেছেন তার সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। দেশি এই দরবার তথা গ্রাম্য শালিসী অনুষ্ঠিত হয়। গ্রামের ছোট খাটো ঝগড়া বিবাদ নিয়ে। খুন, ধর্ষণ, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগের মত গুরুতর অপরাধ নিয়ে শালিস বা দরবার হয়না।
বিদায়ী চেয়ারম্যানের ভাষায় “সরকার গেছে পাগল হইয়্যা, তারা একটা রায় চায়”। চেয়ারম্যান সাহেব ঠিকই বুঝেছিলেন যে, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সরকার আমাকে ঘায়েল করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কতগুলো ঘটনা সাজিয়ে, জঘন্য ও ন্যাক্কারজনক কিছু অপবাদ দিয়ে আমার বিচারের নামে প্রহসনের আশ্রয় নিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের ব্যপারে বিশ্বাসযোগ্য কোন স্বাক্ষী নেই, আমার কোন সংশ্লিষ্টতাও নেই। সুতরাং ট্রাইাব্যুনাল গঠন করে বিচার বিচার খেলা কেনো, দরবার করে মিটমাট করলেই তো চলে। এটিই ছিলো প্রাক্তন চেয়ারম্যান এর রায়।
মাননীয় আদালত,
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার এর পূর্বেও দু’বার ক্ষমতাসীন ছিলো। তখন আমি যুদ্ধাপরাধী ছিলাম না। আমার বিরুদ্ধে কোন মামলাও হয়নি। একটি জিডিও হয়নি বাংলাদেশের কোথাও।
আর তদন্ত কর্মকর্তা এই আদালতে বলেছেন ’৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের পর আমি নাকি ৮৫ সাল পর্যন্ত পলাতক ছিলাম। তিনি আমাকে ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম বলে মিথ্যচার করেছে।
১৯৭৯ সালে আমি সাধারন সমর্থক হিসেবে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করি। এর পূর্বে আমি কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থক ছিলাম না। ১৯৯০ সনের শুরু অবধি আমার রাজনৈতিক কোন পরিচয়ও ছিল না। ১৯৮৯ সালে আমি জামায়াতের মজলিসে শুরায় সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হই। এরপর জামায়াতের কর্ম পরিষদ সদস্য, নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও পরবর্তীতে তথাকথিত মানবতাবিরোধী এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে আপনার কাঠগড়ায় দাড়ানোর পূর্ব পর্যন্ত আমি জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীরের দ্বায়িত্ব পালন করছিলাম।
রাজনীতিতে আমার তালিকাভূক্তি ১৯৭৯ সালে জামায়াতে ইসলামীর একজন সাধারন
সদস্য হিসেবে। উদ্দেশ্য পবিত্র কুরআনের মর্মবানী ও আদর্শের প্রচারকে
বৃহত্তর পরিসরে নিয়ে যাওয়া।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহনের বাইরে আমার রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক তৎপরতায় সময় ব্যয় একেবারেই অনুল্লেখযোগ্য। সংকোচনহীন ভাবে বলতে গেলে, রাজনীতির জটিল সমীকরনের বিষয়ে আমার অজ্ঞতা এবং সময়ের অভাবহেতু প্রচলিত রাজনীতিবিদ হিসেবে আমার অবস্থান একজন এ্যামেচার রাজনীতিবিদের পর্যায়ে।
দেশবাসী স্বাক্ষী, রাজনীতিবিদ হিসেবে আমার কখনো কোনকালেই তেমন কোন ভূমিকা ছিল না। বরাবরই আমার বিচরন ছিলো কোরআনের ময়দানে। জনগনকে কোরআনের দাওয়াত পৌঁছানোই ছিল আমার কাজ।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহনের বাইরে আমার রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক তৎপরতায় সময় ব্যয় একেবারেই অনুল্লেখযোগ্য। সংকোচনহীন ভাবে বলতে গেলে, রাজনীতির জটিল সমীকরনের বিষয়ে আমার অজ্ঞতা এবং সময়ের অভাবহেতু প্রচলিত রাজনীতিবিদ হিসেবে আমার অবস্থান একজন এ্যামেচার রাজনীতিবিদের পর্যায়ে।
দেশবাসী স্বাক্ষী, রাজনীতিবিদ হিসেবে আমার কখনো কোনকালেই তেমন কোন ভূমিকা ছিল না। বরাবরই আমার বিচরন ছিলো কোরআনের ময়দানে। জনগনকে কোরআনের দাওয়াত পৌঁছানোই ছিল আমার কাজ।
আমার তাফসীর মাহফিলগুলোতে হাজারো লাখো মানুষ অংশগ্রহন করে। এইসব মাহফিল
থেকে অসংখ্য অগনিত মানুষ সঠিক পথের দিশা পেয়েছে, নামাজি হয়েছে।
এটাই কি আমার অপরাধ?
দেশ বিদেশের লক্ষ্য কোটি মানুষ আমার উপর আস্থা রাখেন। আমাকে বিশ্বাস করেন, আমাকে ভালবাসেন। আমি সাঈদী লক্ষ কোটি মানুষের চোখের পানি মিশ্রিত দোয়া ও ভালবাসায় সিক্ত। এই ভালবাসাই কি আমার অপরাধ?
মাননীয় আদালত,
আমি মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, হে আল্লাহ! আমার বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তা, তার সহযোগী প্রসিকিউশন এবং মিথ্যা স্বাক্ষ্যদাতাদের হেদায়েত করো। আর হেদায়েত তাদের নসীবে না থাকলে তাদের সকলকে শারিরিক, মানসিক ও পারিবারিকভাবে সে রকম অশান্তির আগুনে দগ্ধিভুত করো। যেমনটি আমাকে, আমার পরিবারকে এবং বিশ্বব্যাপি আমার অগনিত ভক্তবৃন্দকে মানসিক যন্ত্রনা দিয়েছে। আর জাহান্নামই করো তাদের চিরস্থায়ী ঠিকানা।
হে মহান রাব্বুল আলামীন! এই আদালতের বিচারক মন্ডলীকে তোমাকে ভয় করে, পরকালের কঠিন শাস্তিকে ভয় করে, সকল প্রকার চাপ এবং কারো নির্দেশ পালন বা কাউকে খুশী করার উর্ধ্বে উঠে শুধু তোমাকে ভয় করে এবং বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে ন্যায় বিচার করার তওফিক দান করো।
মাননীয় আদালত, আমি আমার সকল বিষয় সেই মহান আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিয়েছি। যিনি আমার কর্ম বিধায়ক এবং তাঁকেই আমি আমার একমাত্র অভিভাবক হিসেবে গ্রহন করেছি। সাহায্যকারী হিসেবে মহান আরশের মালিক আল্লাহ রব্বুল আলামীন-ই আমার জন্য যথেষ্ঠ।
বাংলাসংবাদ২৪/সাকিল আহমেদ/বিএইচএটাই কি আমার অপরাধ?
দেশ বিদেশের লক্ষ্য কোটি মানুষ আমার উপর আস্থা রাখেন। আমাকে বিশ্বাস করেন, আমাকে ভালবাসেন। আমি সাঈদী লক্ষ কোটি মানুষের চোখের পানি মিশ্রিত দোয়া ও ভালবাসায় সিক্ত। এই ভালবাসাই কি আমার অপরাধ?
মাননীয় আদালত,
আমি মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, হে আল্লাহ! আমার বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তা, তার সহযোগী প্রসিকিউশন এবং মিথ্যা স্বাক্ষ্যদাতাদের হেদায়েত করো। আর হেদায়েত তাদের নসীবে না থাকলে তাদের সকলকে শারিরিক, মানসিক ও পারিবারিকভাবে সে রকম অশান্তির আগুনে দগ্ধিভুত করো। যেমনটি আমাকে, আমার পরিবারকে এবং বিশ্বব্যাপি আমার অগনিত ভক্তবৃন্দকে মানসিক যন্ত্রনা দিয়েছে। আর জাহান্নামই করো তাদের চিরস্থায়ী ঠিকানা।
হে মহান রাব্বুল আলামীন! এই আদালতের বিচারক মন্ডলীকে তোমাকে ভয় করে, পরকালের কঠিন শাস্তিকে ভয় করে, সকল প্রকার চাপ এবং কারো নির্দেশ পালন বা কাউকে খুশী করার উর্ধ্বে উঠে শুধু তোমাকে ভয় করে এবং বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে ন্যায় বিচার করার তওফিক দান করো।
মাননীয় আদালত, আমি আমার সকল বিষয় সেই মহান আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিয়েছি। যিনি আমার কর্ম বিধায়ক এবং তাঁকেই আমি আমার একমাত্র অভিভাবক হিসেবে গ্রহন করেছি। সাহায্যকারী হিসেবে মহান আরশের মালিক আল্লাহ রব্বুল আলামীন-ই আমার জন্য যথেষ্ঠ।
No comments:
Post a Comment